ঢাকা , বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫ , ১১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজাপুরে খাল খননে অনিয়ম, সরকারি অর্থ অপচয়ের অভিযোগ


আপডেট সময় : ২০২৫-০৩-২৫ ১৮:৪৯:৪৮
রাজাপুরে খাল খননে অনিয়ম, সরকারি অর্থ অপচয়ের অভিযোগ রাজাপুরে খাল খননে অনিয়ম, সরকারি অর্থ অপচয়ের অভিযোগ

 
মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নে সরকারি উদ্যোগে খাল খনন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পুটিয়াখালি গ্রামে কায়সার তালুকদার বাড়ি থেকে শুরু হয়ে তালিম তালুকদার বাড়ি হয়ে আলতাব মাষ্টার পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার খাল খনন কাজে ব্যাপক অনিয়ম। স্থানীয়দের দাবি, প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ ও খননকাজে অবহেলার কারণে কাজ মানসম্মতভাবে সম্পন্ন না হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত সুফল পাচ্ছেন না তারা।
 
সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল জলাবদ্ধতা দূর করা এবং কৃষিকাজের জন্য পর্যাপ্ত পানি সংরক্ষণ করা। তবে বাস্তবে দেখা গেছে, খননকাজ অসম্পূর্ণ, অনেক জায়গায় খালের নির্ধারিত গভীরতা ও প্রশস্ততা ঠিকভাবে কাটা হয়নি এবং খালের পাড়গুলো দুর্বলভাবে তৈরি করা হয়েছে। এতে বৃষ্টির মৌসুমে খাল ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
 
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, খাল খননের নামে অল্প কিছু অংশ কাটা হয়েছে, বাকিটা আগের অবস্থায় রয়ে গেছে। এছাড়া, কিছু জায়গায় অনুমোদিত গভীরতা অনুযায়ী মাটি না সরিয়ে কেবল উপরের স্তর কেটে দায়সারা কাজ করা হয়েছে।
 
একজন স্থানীয় কৃষক আব্দুল আজিজ বলেন, "আমরা ভেবেছিলাম খাল খননের পর জমিতে সেচ সুবিধা পাবো, কিন্তু এখনো আগের মতোই পানি সংকটে আছি। কাজ ঠিকভাবে হলে আমাদের উপকার হতো।"
 
স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াজ হাওলাদার বলেন, "যে পরিমাণ খনন কাজ হওয়ার কথা ছিল, তার অর্ধেকও হয়নি। অথচ পুরো অর্থ ব্যয়ের হিসাব দেখানো হবে"
 
এদিকে, অভিযোগ রয়েছে যে অনেকের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে তাদের বাড়ির সামনে খননকাজ ঠিকমতো না করে অর্থের একটি বড় অংশ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের পকেটে গেছে। তবে এসব অভিযোগের ব্যাপারে রাজাপুর উপজেলা প্রকৌশল অফিস বলছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
 
এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মো. জাকির হোসেন ক্যামেরার সামনে বক্তব্য দিতে রাজি না হওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 
 
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, খাল খনন শেষ হলে আমরা সার্ভেয়ার পাঠিয়ে মেপে নিবো তারা যদি মাটি কম কাটে তাহলে টাকা কম পাবে। যতটুুকু মাটি কাটা হবে তার টাকা পাবে।
 
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ বলেন, "আমরা অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করছি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
 
সরকারি প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ। যেন ভবিষ্যতে উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা অপচয় না হয় এবং জনগণ প্রকৃত সুবিধা পায়। অন্যথায় এই ধরনের অনিয়মের ফলে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রতি মানুষের আস্থা কমতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ